ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

অপহৃত শিশুকে উদ্ধার ও চাচাসহ ৩জন গ্রেপ্তার

চকরিয়ায় পারিবারিক শত্রুতায় চার মাস বয়সি ভাইপোকে অপহরণ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়ায় পারিবারিক শত্র“তার জের ধেরে চার মাস বয়সি ছোট্ট শিশুকে অপহরণ করে তার আপন বড় চাচাসহ তিন অপহরণকারী। তবে অপহরণ করেও বাঁচতে পারেনি অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। বাসের ষ্টাফ ও যাত্রীদের সহায়তায় রক্ষা পায় অপহৃত শিশু নুরুল কাদের। অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীদের তুলে দেয়া হয় চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফূলী থানা পুলিশের হাতে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ডেইঙ্গা কাটা এলাকায়।

বুধবার দুপুরের দিকে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ওই শিশুকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে বুধবার রাতে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীদের নিয়ে আসে।

এঘটনায় অপহৃত শিশুর মা জোসনা আক্তার বুধবার রাতে বাদি হয়ে অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে আসামী করে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া থানা পুলিশ এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করেন।

আসামীরা হলেন- চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ডেইঙ্গাকাটা এলাকার আলী হোসেনের ছেলে ও অপহৃত শিশু বড় চাচা মো.আল আমিন (২৬), চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার মো.ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ আরিফ (২৪) ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়ার মাগুরাবাজার এলাকার মোজাম্মেলের ছেলে নুরুন্নবী (২৫)।

মামলা বাদি জোসনা আক্তার বলেন, গত ২৯ তারিখ রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করে আমি ও আমার শ্বাশুড়ি যার যার রুমে ঘুমিয়ে পড়ি। এসময় আমার চার মাস বয়সি শিশু সন্তান নুরুল কাদেরও ঘুমিয়ে পড়ে। ওইরাতের কোন একসময় আমার ভাসুর আল আমিনের নেতৃত্বে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে বাড়ির দরজা খুলে আমার শিশু সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ভোর রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে দেখি সন্তান নেই। বাড়ির চারপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু কোথায় আমার সন্তান নুরুল কাদেরের সন্ধান না পেয়ে প্রতিবেশিদের ঘটনাটি বলি।

তিনি আরও বলেন, পরদিন দুপুরের দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পায় আমার শিশু সন্তান নুরুল কাদেরকে উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের কর্ণফূলী থানা পুলিশ। এসময় অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করে বলে জানতে পারি। বিষয়টি চকরিয়া থানার ওসিকে অবহিত করি। পরে চকরিয়া থানার পুলিশের একটি টিম কর্ণফূলী থানায় গিয়ে শিশু নুরুল কাদের ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে নিয়ে আসে।

যাত্রীবাহি হানিফ পরিবহণের সুপার ভাইজার মো.শফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, হানিফ পরিবহণের একটি বাসে করে একটি শিশুসহ তিনজন চট্টগ্রামে যাচ্ছিল। এসময় শিশুটি প্রচন্ডভাবে কান্নাকাটি করছিলো। বিষয়টি গাড়ির যাত্রীদের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। শিশুটি কার ? তখন তিনজনের মধ্যে থেকে আল-আমিন বলেন এটা আমার সন্তান। শিশুর মা কোথায জানতে চাইলে উল্টোপাল্টা উত্তর দিতে থাকে। এতে আমাদের আর সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে তাদের কর্ণফূলী থানায় নিয়ো যায়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকার করে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহৃত শিশুটি আল-আমিনের ছোট ভাইয়ের সন্তান। পারিবারিক শুত্রুতার জেরে চারমাস বয়সি ওই শিশুকে অপহরণ করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী চকরিয়া নিউজকে বলেন, শিশুর আপন বড় চাচা পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে চার মাস বয়সি শিশু নুরুল কাদেরকে অপহরণ করে। পরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ বাসের সুপারভাইজার ও যাত্রীদের সহায়তায় ওই শিশুকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুর চাচা মো.আল-আমিন তার ছোট ভাইয়ের পরিবারকে অনেক অত্যাচার করেছে। তারপরও তারা সহ্য করে গিয়েছে। সর্বশেষ বড় চাচা শিশু নুরুল কাদেরকে অপহরণ করলো।

 

পাঠকের মতামত: